কেন করবেন? এটা জেনে তবেই কোনো কাজ শুরু করুন(Start With Why):-

 কোনো কাজ শুরু  করার আগে "সেই কাজ কেন করা দরকার?" তা জানা প্রয়োজন :-

আমরা দেখেছি পৃথিবী তে খুব কম লোক  আছে তারা সফল হন কেন এটা হয় যে কিছু লোক  সফল হন, আর কিছু লোক অসফল ? কারণ আমরা দেখেছি যে সফল লোক সফল হওয়ার পিছনে কিছু বিশেষ গুন্ রয়েছে যা সফল ব্যক্তিদের সফল বানায় এর মধ্যে একটি বিশেষ গুন্ হলো সফল ব্যক্তিরা যা কিছু করেন তাতে তাদের একটি মহৎ উদ্দেশ্য থাকে তারা যাই করেন, তাতে তাদের একটি উদ্দেশ্য থাকে যেটা সমাজকে কিছু সাহায্য করে

 খুব কম জনেরই জানা আছে তারা যা করেন তা কেন করেন?অনেক মানুষ যে কাজ করেন, সেই কাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ? বা কতটা উপকারী ? সেই কাজ করলে কি খারাপ হতে পারে? ..এসব না ভেবেই অনেকে  অনেক ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিয়ে নেন  অনেকে আছেন.. যারা যে চাকুরী করেন তা করার ইচ্ছা নেই, অন্য কিছু করতে চান,  কিন্তু তবু না পছন্দের চাকুরীটাই করে যাচ্ছেন।  এভাবে শুধু জীবন নির্বাহ করার জন্যে কাজ করে যাওয়াটা ব্যর্থতা। শুধু টাকা রোজগার করা টাই উদ্দেশ্য নয় ।  আপনি যে কাজটিই করছেন এর উদ্দেশ্য কিটাকা এবং সম্মান বাদ দিয়ে চিন্তন করুন, কেন এই কাজটি করছেন?আপনি কি অন্য বড় কিছু করতে চান?

অনেক মানুষেরই নিজের উদ্দেশ্য জানেন না কোন জিনিষটা কিনছেন, কেন কিনছেন জানেন না?
 কি করছেন, কেন করছেন জানেন না?
সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে সাময়িক একটু আনন্দ পেতে গিয়ে জীবনের বড় বড় ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসছেন
একটি মাছকে যখন বড়শি দিয়ে ধারার জন্যে টপ দেওয়া হয়, তখন মাছটি ভাবে আমাকে ফ্রি তে খাবার দেওয়া হচ্ছে মাছটি না বুঝে সেটা খায় এবং তার ফলে তার মুখে টোপেই লুকোনো থাকা কাঁটা টি মুখে গেথে যায়, সে  ধরা পড়ে এবং তাকে হত্যা করা হয় . আমাদের জীবনেও সেটা হয় সাময়িক আনন্দের কারণে, বা সাময়িক মানসিক উদ্দীপনার কারণে, বড় বড় ভুল করেন  

সেই জন্যেই "সায়মন স্নেক" এর লেখা বই "Start With Why" বইটি পড়া খুব জরুরি আপনার জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে থাকা দরকার তিনি বলছেন কোনো কিছু করতে গেলে আগে ভাবা দরকার সেটা কেন করতে হবে?                                                                                                                                                                                                       


তার Golden Circle  থিওরির মতে ভিতর থেকে বাইরে আস্তে হবে। তাই Golden Circle এর কেন্দ্রে রয়েছে why( কেন?),তারপর রয়েছে How( কেমন করে?), এবং সবথেকে বাইরে রয়েছে what(কি?)

Golden Circle Rule:-কোনো কিছু করার আগে পরিষ্কার ভাবে জানতে হবে কেন কাজটি করা হবে? তার মধ্যে কি এমন রয়েছে যে কাজটি করতেই হবে? একবার যদি আপনার উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়েযায় যে সে কাজটি করতেই হবে, তাহলে কর্মের দিশা নির্ণয় হয়ে গেল। এবার যখন পরিষ্কার হলো যে কেন কাজটি করা দরকার, এবং সেই উত্তরটি যদি সহজেই গ্রহণ যোগ্য হলো তাহলে তখন দ্বিতীয় পদক্ষেপ হলো কিভাবে কাজটি করতে হবে ?  "কেন?"এর উত্তরটি পরিষ্কার থাকলে, কিভাবে কাজটি করতে হবে তার পদ্ধতি  বের করা সহজ হয়ে যায়। কাজটি কেন করা দরকার সেই উত্তরটি খুব মূল্যবান  হলে, তখন সেই কাজটি করার জন্যে জ্বলন্ত চাহিদা  উৎপন্ন হয়।যার ফলে মন প্রচণ্ড মনোযোগ সহকারে কাজটি করার জন্য how (কিভাবে?) অর্থাৎ কাজটি করার পদ্ধতিটি খুঁজে বের করতে সাহায্য করে।

তৃতীয়টি হলো what (কি?)অর্থাৎ অন্তিম নির্মিত বস্তু।                                                                                                                                                            


 উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক:-  যদি আপনাকে বলা হলো এই দেয়াল টি কে শাবল এবং হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতে।

আপনি সেটা করবেন? না করবেন না।

 কিন্তু যদি  বলা হলো এই দেয়াল এর পেছনের বাড়িতে আগুন লেগেছে সেই বাড়ির মধ্যে একটি পরিবার আটকে রয়েছে, তাদের বের করতে আনতে হবে এই দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকতে হবে এবং তাদের বের করতে হবে তাই এই দেয়াল এখুনি ভেঙে ফেলুন। এবার আপনি এক মহৎ কারণ পেয়ে গেলেন কেন দেয়াল ভাঙা দরকার। এবার কিন্তু দেয়াল ভাঙতে পিছপা হবেন না। এমনি ভাবে যে কোনো কাজ করার পেছনে যদি একটি মহৎ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে  সেটি করার জন্যে প্রচণ্ড উৎসাহ পাওয়া যায়। তাই বলছি কোনো কাজ শুরু করার পেছনে Why (কেন?) এর উত্তরটি গুরুত্বপূর্ণ।

 

দ্বিতীয় উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক। একজন বিক্রেত কলম বিক্রি করতে এসেছেন।তিনি বলছেন এই কলম টি দেখতে খুব সুন্দর। জার্মান প্রযুক্তি দিয়ে এই কলমটি তৈরি।কলম টি আপনি কিনুন। এমনটি বললে খুবই কম সম্ভাবনা আছে যে আপনি কলম টি কিনবেন।

কিন্তু যদি বলা হয়।এই কলম টি  জার্মান প্রযুক্তিতে এমন ভাবে তৈরি যে অনেকক্ষণ ধরে লিখলেও  আপনার হাতে ব্যাথা হবে না, এটি জামার আপনার পকেট এ রাখলে আপনার ব্যক্তিত্ব কে বাড়িয়ে তুলবে। এই কলম এ লিখলে হাতের লেখা খুব সুন্দর হবে। এই কলম এ এতো বেশি কালি আছে, যে অন্য দুটি কলম এর লেখা এই একটি কলম দিয়ে  একবার কালি দিলে লেখা যাবে। এবার আপনি কলম টি কেনার উপকারিতা ভালোভাবে জানলেন ,পরিষ্কার হলো যে "কেন" আপনার  কলমটি কেনা দরকার। এবার আপনি কলম টি কিনবেন। এইভাবেই "কেন? "এই প্রশ্নের উত্তর টি পরিষ্কার থাকা দরকার।

 

বিশ্বের দ্বিতীয়  বৃহত্তম ধনী ব্যক্তি এবং 'মাইক্রোসফট' এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এর কথা এই ধরা যাক:- তাঁর উদ্দেশ্য হলো "প্রযুক্তি"  দিয়ে মানুষ কে ক্ষমতাশালী তৈরি করা, যাতে মানুষ বেশি উৎপাদনশীল হয়, বেশি কর্মক্ষম হয়।সেই উদ্দেশ্যে ই তিনি মাইক্রোসফট এর প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই জন্যেই তিনি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধনী ব্যক্তি। এখানেও "কেন?" এর উত্তর টি তাঁর কাছে পরিষ্কার এবং উদ্দেশ্য মহৎ রয়েছে। তাই আজ তিনি সফল। 

                                            


 

 বিশ্বের অন্যতম কোম্পানি Apple এর কথা ধরা যাক:- Apple  Company এর উদ্দেশ্য হলো mobile, iphone , Laptop এর প্রযুক্তি তে নতুন প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা আপনা কে অনুভব করানো। Apple অন্য Company কে  অনুসরণ করে না, নিজে নতুন প্রযুক্তির স্বাদ নিয়ে আসে। এই জন্যই Apple সফল। এই কোম্পানির প্রোডাক্ট লোক "কেন" কিনবেন  এই উদ্দেশ্য পরিষ্কার।  তাই Apple Company সফল।

 

মানুষ কে কোনো কাজ করাতে উৎসাহিত করার দুটি পদ্ধতি রয়েছে:-

 ১) কাজের পেছনে যে উদ্দেশ্য মহৎ আছে তা তাকে জানিয়ে দিলে তিনি তা উৎসাহিত হয়ে নিজে থেকেই কাজ টি করবেন।

২) দ্বিতীয় পদ্ধতি টি হলো তাকে মিথ্যে বলে,মিথ্যে প্রতিশুতি দিয়ে, লোভ দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে,  'যেন তেন প্রকারেন' অর্থাৎ যে ভাবেই হোক কাজটি আদায় করা।

 

 

বাজারে অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা ভুলপ্রতিশুতি দিয়ে প্রোডাক্ট বিক্রি করেন।

কিছু কোম্পানি প্রোডাক্ট এ ঘোষণা করেন এই ওষুধ টি খেলে মাসে  4kg -5kg ওজন কমবে। এই মিথ্যা প্রতিশুতি তে অনেকে বিশ্বাস করে তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর লোভ এ  সেই ওষুধ খান।

 

"পেপসি" ঠান্ডা পানীয় এর প্রচার এ সালমান খান বলেন পেপসি পান করুন নতুন পদ্ধতি বের করুন।  পেপসি পান করলে কি পদ্ধতি বের হবে?  কিছুই না।

 সালমান "mountain dew" ঠান্ডা পানীয়  এর প্রচার  এ বলেন "ভয় কাটিয়ে  এগিয়ে গেলেই জয় আছে" ঠিক কথা, কিন্তু এর সাথে Mountain Dew পানীয় এর কোনো সম্পর্ক নেই, বরং লেবু জল খেলে কিছুটা কাজ হতে পারে, যা শরীর এর জল এর কমতি দূর করবে, শরীর কে সতেজ করবে।

Mountain Dew বা Pepsi পান করলে শরীর এ dehydration ঘটিয়ে শরীর এর জল বের করে দেয়, যা শরীর এর পক্ষে ক্ষতিকর। 'পেপসি' বা 'মাউন্টেন  ডিউ' এর মতো পানীয় শরীর এ প্রচুর পরিমান এ চিনি মেশানো থাকে যা শরীর এ ক্যালোরি বাড়িয়ে, শরীর এ মেদ বাড়িয়ে, শরীরকে ক্ষতি করে ।

 

সেলিব্রিটিদের দিয়ে প্রচার করিয়ে এভাবেই মানুষ কে ভুল বুঝিয়ে কিছু কোম্পানি নিজের লাভ করে। এবং কিছু মানুষ সেটাকেই সত্যি মনে করে সেই প্রোডাক্ট ব্যবহার করে।

 

আবার এমন হয়.. সামান্য একটু উদ্দীপনা লাভ এর লোভ এ অনেকে নেশার শিকার হন। সাময়িক ছোট একটু আনন্দ পাওয়ার পরিবর্তে বড় বড় ভুল করেন। মদ,গাঁজা, বিড়ি ,সিগারেটে, এসব জিনিস ছোট ছোট সাময়িক উদ্দীপক হলেও দীর্ঘ জীবনে বড় ক্ষতি করে।

 

 তাই কোনো কিছু করার আগে 'কেন করবো ?"এটা ভেবে দেখে তবেই কাজ শুরু করা দরকার।

 

Start With Whyবই তে মহান লেখক Simon Sinek এসব বিষয়ে খুব গভীর ভাবে আলোচনা করেছেন। বইটি সবারই অবশ্যই পড়া দরকার।এই বই থেকে কিছুটা সারবস্তু আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম।

 

 ভালো লাগলে অবশ্যই "লাইক" করবেন," শেয়ার" করবেন ,এবং "কমেন্ট" করবেন।  ধন্যবাদ।।


আরো পড়ুন:-Ratan Tata, Mukesh Ambani, Azim Premji, Gandhiji, Mandella, Kalam's Quotes  , Rich Dad vs Poor Dad THE 10X RULE

                 Motivational And Inspirational Quotes For Success

                  Dan Lok's Advice And Quotes For Success ,                                                           "IKIGAI" A path for Success,  14 Risks you must take for Success

                  আত্মজ্ঞান কি , আত্মবিশ্বাস কি করে বাড়াবেন , জীবনের লক্ষ্য নির্ণয় করুন , 

                  শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সার , যে কোনো খারাপ অভ্যাস কি করে বদলাবেন , 

                  ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে বড় লক্ষ্য প্রাপ্তি করা যায় , সফল হবার সূত্র , 

                  মহান ব্যক্তিদের সাতটি অভ্যাস ,   11 Qualities of a Successful Person.

                ব্যবসার জন্য মুদ্রা লোন PMMY  Loan , Inner Engineering by Sadguru Jaggi Vasudev



For Motivational Articles In English visit......www.badisafalta.com




  

 

 

Post a Comment

0 Comments