সফল ব্যক্তিদের ১১ টি গুন্ যা তাঁদের সফল হতে সাহায্য করে:- (11 qualities that help a person to be successful.)

এই 10টি জিনিস সফল ব্যক্তিরা সবসময় করে থাকেন:-

সফল ব্যক্তিদের সফলতার কারণ রয়েছে তাঁদের জীবন শৈলীর পদ্ধতি। তাঁদের আচরণে, ব্যবহারে, স্বভাবে, কিছু গুন্ রয়েছে যা তাঁদের সাধারণ লোকেদের থেকে আলাদা করে থাকে এবং তাঁদের সফল করে থাকে।

আজ আমরা সফল ব্যক্তিদের সেই ১০টি গুন্ সম্বন্ধে আলোচনা করবো:-

1) তাঁদের মানসিক চিন্তা ধারা সবসময় বড় থাকে। তাঁরা সবসময় বড় কিছু করতে চান। তাঁরা সমাজের বড় কিছু সমস্যা সমাধান করতে, অথবা সামাজিক অবস্থাকে আরো ভালো থেকে খুব ভালো করতে, কাজ করে যান। তাঁরা সব সময় এমন কিছু বড় কাজ করতে যান যা সাধারণ লোকের ক্ষমতার আওতায় থাকে না। সব সময় তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে চলেন যতই বাধা বিপত্তি আসুক না কেন পিছু কখনও পিছুপা হন না ।

2) তাঁরা প্রতিদিন যে কাজ করেন.. সেটা একটা নিয়ম মাফিক করেন। কোন কাজটা আগে করতে হবে, কোন কাজটা পরে করতে হবে এসব ব্যাপারে তারা খুব সাবধানতার সাহায্যে কাজগুলি পছন্দ করেন এবং যে কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সে কাজটি আগে করেন,কোন কাজটা আগে করতে হবে, কোন কাজটা পরে করতে হবে, এটা তারা নিয়মমাফিক তৈরি করেন এবং যাতে সময়ের সঠিক ব্যবহার হয়, যাতে কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে করে সময় নষ্ট না করা হয়, এইজন্য তারা প্রত্যেক দিনটিকে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করে পরিচালিত করেন।এখানে গুরুত্বপূর্ণ বলতে যেমন ধরুন আপনি কোন একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন হয়তো আপনি ডাক্তার হতে চান,অথবা আপনি শিক্ষকতা করতে চান। দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য যা প্রয়োজন,বা জীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য যা প্রয়োজন, তার জন্য তো কাজ করতেই হবে, সেটা তো দরকার, কিন্তু সারা জীবনের জন্য দীর্ঘমেয়াদিভাবে আপনার মনে অবশ্যই একটা লক্ষ্য রাখতে হবে যে, আপনি পৃথিবীতে এসেছেন তার উদ্দেশ্যে হলো...আপনার জীবনে এমন একটি জিনিস আছে, যেটা আপনি করতে চান। এমন কিছু আপনি করতে চান, যেটা না হলে মনে হয় আপনার জীবনটা অচল হয়ে যাবে।

3) সফল ব্যক্তিরা সবাইকে গ্রহণ করেন। যে যে ধরনের চরিত্রের লোক হোক না কেন, তাদের কে গ্রহণ করে তাদেরকে স্বীকার করে সবাইকে নিয়ে সমাজ কে চালিয়ে যান। কারন তারা জানেন সব ব্যক্তির মধ্যে কিছু না কিছু কমজোরি, কিছু না কিছু ভালো, কিছু না কিছু মন্দ রয়েছে তারা সেটাকে স্বীকার করেন, এবং সেই সকল ধরনের ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যান, সেই ব্যক্তির মধ্যে যদিও বা কোন ভুল থাকে, তাহলে তাকে ধীরে ধীরে বুঝিয়ে সঠিক পথে নিয়ে আসেন । তারা সবসময় বিশ্বাস করেন সবার মধ্যেই একটা ভালো দিক রয়েছে। অতএব তারা চেষ্টা করতে ছাড়েন না, অথবা সেই ব্যক্তি কে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পিছুপা হন না। তাদের রাস্তা কত কঠিন বা কত সুন্দর হবে সেটা নিয়ে মাথা ঘামান না। তারা জীবনে যা উদ্দেশ্য নির্ণয় করেন, সেই উদ্দেশ্য কিভাবে সফল হবে তার জন্য কাজ করে যান।

4) তাদের যতই কাঠখড় পোড়ানোর হোক, যতই চেষ্টা করা হোক, যা কিছু দরকার, যতই পরিশ্রম করা হোক, সবকিছু করতে চান। তারা একবার যদি বুঝে যান যে.. “এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সমাজের জন্য প্রয়োজন” জনগণের প্রয়োজনে একবার দিক নির্দিষ্ট হয়ে গেলে, আর পিছপা হন না।

5) সফল ব্যক্তিরা অপেক্ষা করতে জানেন। একটা কথা আছে... লোহা যখন গরম থাকে তখন আঘাত করো। তার অর্থ হচ্ছে, পরিস্থিতি হিসেবে সময়কে সঠিকভাবে পছন্দ করে.. যখন যেটা প্রয়োজন তখন সেটা করা। এই জিনিসটাকে তারা খুব গুরুত্ব দেন। কারণ সঠিক সময় যদি চেনা যায়, সঠিক সুযোগ যদি চেনা যায়, তাহলে যে কোন কাজ করাটা সহজ হয়ে যায়।

6) তাঁরা ক্রমাগত শিক্ষা লাভ করতে থাকেন। বাস্তব কথা বলতে গেলে, শিক্ষার কোন শেষ নেই। আর নতুন কিছু করতে গেলে নতুন কিছু শিখতে হয়। সেজন্য শিক্ষাকে গ্রহণ করতে তাঁরা কখনও পিছপা হন না। তাঁরা যেহেতু সব সময় নতুন নতুন পদক্ষেপ নেন, নতুন নতুন শিক্ষা লাভ করা তাদের কাছে অত্যন্ত জরুরী। তাঁরা সেটা করে থাকেন, নতুন নতুন জিনিস শিখতে থাকেন, এবং সেটা প্রয়োগ করতে থাকেন। আবার নতুন নতুন জিনিস করতে গিয়ে যে বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হন, সে বাধাকে অতিক্রম করতে আবার নতুন শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে, নতুন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ে, আবার সেটা নিয়ে তাঁরা শিখতে থাকেন, এভাবে “শিক্ষা এবং কর্ম” প্রতিনিয়তই ক্রমাগত চলতে থাকে।

7)সফল ব্যক্তিরা ভালোভাবে জানেন- শরীরকে বিশ্রাম দেওয়াটা অবশ্যক, কারণ কাজ করতে করতে শরীর ক্লান্ত হয়, বা মানসিক চিন্তা করতে করতে মন ক্লান্ত হয়, সেজন্য শরীর যতই সুস্থ হোক তার বিশ্রাম অবশ্যই দরকার। এই বিশ্রাম কাজটি সময়মতো করেন, যাতে বিশ্রাম নিয়ে শরীর এবং মন আবার তরতাজা হয়।

8) সফল ব্যক্তিরা সবাইকে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তারা সম্মান করেন, তারা অন্যের কাছ থেকে পরামর্শ নেন। কাউকেই হেয় করেন না। কারণ কখনো কখনো সাধারণ লোকের কাছ থেকেও নতুন এবং ভালো পরামর্শ পাওয়া যায়। এইজন্য সবার কাছ থেকে তারা পরামর্শ নেন। কিন্তু পরামর্শ নিয়ে সেই জ্ঞান অর্জন করে, সেই পরামর্শ গ্রহণ করে, সেটাকে বাস্তবে রূপায়িত করবেন কিনা.... সেটা তাঁরা নিজে নিজে নির্ণয় করেন।

9) ছোট কিছু প্রাপ্তি হোক, অথবা বড় কিছু প্রাপ্তি হোক, যাই হোক না কেন, সফল ব্যক্তিরা ছোট্ট ছোট্ট সফলতার প্রত্যেকটা মুহূর্তে আনন্দ উপভোগ করেন। কারণ যে কাজ করা হচ্ছে, যে ফল প্রাপ্তি হচ্ছে এই প্রাপ্তির অনুভূতি “মন”কে দেওয়া দরকার, তাতে মন খুশি হয়, মানুষ বুঝতে পারে যে কিছু উন্নতি হচ্ছে, এবং মন আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে।

10)সফল ব্যক্তিরা নতুন নতুন জিনিস শিখতে থাকেন, নতুন নতুন জিনিস করতে থাকেন, নতুন নতুন অভিজ্ঞতা, জ্ঞান অর্জন করেন। সেই জ্ঞান, সেই অভিজ্ঞতা যাতে পরবর্তী অন্যান্য লোকেরা গ্রহণ করতে পারেন, সেই জন্য তারা নিজের কাজ করার সাথে সাথে.. আরেকটা যেটা করেন, সেটা হলো অন্যকে জ্ঞান বন্টন করা। নিজের অভিজ্ঞতা, নিজের জ্ঞান বন্টন করে অন্যদের জীবনেও বৃদ্ধি লাভ করতে বা উন্নতি করতে, সাহায্য করেন। একটি জিনিস মনে রাখতে হবে.. সফল হতে গেলে অবশ্যই পরিশ্রম দরকার, বিনা পরিশ্রমে কোন পাওয়া যায় না। জীবনের লক্ষ্য যাই হোক না কেন, সেটাকে পরিপূর্ণ করতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তার জন্য নতুন জ্ঞান অর্জন করতে হয় এবং সেই জ্ঞানকে বাস্তব রূপ দিতে হয়। এই জিনিসটা সফল ব্যক্তিরা খুব ভালোভাবে করেন। কঠোর পরিশ্রম করেন, কঠোর ত্যাগ করেন, তাদের লক্ষ্যকে পরিপূর্ণ করতে যা কিছু দরকার সব কিছুই করেন। সবকিছু জোগাড় করে, সবকিছু প্রয়োগ করে, লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।

11) সফল ব্যক্তিদের মধ্যে একটা জেদ রয়েছে, তারা একসাথে অনেকগুলো করেন না, প্রথমে একটি কাজ করেন, তারপর আরেকটি কাজ করেন। কারণ একসাথে অনেকগুলো কাজ করলে, কোন কাজেই ভালোভাবে হয় না। সেই জন্য যে কাজটি খুব গুরুত্বপূর্ণ তার উপর নজর দেন, সেটার উপর সবথেকে বেশি সময় দেন, সেটাকে সব থেকে বেশি ফলপ্রসূ করেন, প্রানপন চেষ্টা করেন, কোনোমতে পিছপা হন না। সেই লক্ষ্য পরিপূর্ণ হতে যা দরকার সবটাই করেন।